‘ইলমে দীন’ অর্জন করা সকল মুসলমান নারী ও পুরুষের উপর ফরয। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
طلب العلم فريضة على كل مسلم
ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।
তবে নারীদের শিক্ষা নারীদের উপযোগী করে দেওয়ার বিষয়ে ইসলাম বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। কারণ নারীদের জ্ঞান-বুদ্ধি, শক্তি-সামর্থ, প্রয়োজন ও চাহিদা পুরুষের চেয়ে ভিন্ন। নারীত্বের কিছু বৈশিষ্ট্য ও সীমাবদ্ধতা প্রকৃতিগত, যা অনস্বীকার্য ও সেদিকে লক্ষ রাখাও মানবিকতার বিষয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলা সাহাবীদেরকে তাদের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষা দিতেন এবং এ বিষয়ে সকলের প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন।
মহিলা সাহাবীদের মাঝেও আলেমা, হাফেজা, ফকীহাহ, মুহাদ্দিসাহ ও দীনি ইলমে বুৎপত্তি লাভকারী অনেক মহিলা ছিলেন। হযরত আয়েশা রা. ফকীহুল উম্মাহ ছিলেন! হযরত উম্মে সালামা রা. ফকীহ ও মুফতী ছিলেন। হযরত যায়নাব বিনতে আবু সালামাহ রা. সম্পর্কে আছে যে, “তিনি তার সময়ের নারীদের মাঝে সব চেয়ে বড় ফকীহ ছিলেন।
হযরত উম্মে আবু দারদা আল কুবরা রা, অত্যন্ত ইবাদতগুজার, বুদ্ধিমতি, ও বহুবিধ জ্ঞানের অধিকারী একজন ফকীহ সাহাবী ছিলেন।
এই সব নারী সাহাবীদের অনুসরণ করে পরবর্তী যুগের মুসলিস নারীরাও ব্যাপকভাবে হাদীস, ফেকাহ, কবিতা, সাহিত্যসহ বহুবিধ জ্ঞানার্জনের পথে অগ্রসর হয়েছেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে বড় বড় অবদান রেখেছেন এবং যুগে যুগে উম্মাহর খেদমতে নিজেদের নাম ও কর্মের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
পরিবারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা মায়ের। মা চাইলে পুরো ঘরের পরিবেশ ইসলামী ধাচে গড়তে পারেন। ঘরের দ্বীনী পরিবেশে বেড়ে ওঠা শিশুরা বাইরের নেতিবাচক প্রভাব থেকে সহজে বাচতে পারে। সুতরাং মা যদি ইসলামী শিক্ষা অনুযায়ী জীবনযাপনে বদ্ধ পরিকর হন, তবে সন্তানও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। আমাদের উদ্দেশ্য হল, সকল শ্রেণির নারীদের ইলমে দ্বীন শিক্ষা দানের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পরিপূর্ণ দ্বীন জিন্দা করা। দাওয়াত, তা’লীম, তাযকিয়ার মেহনতের মাধ্যমে মুত্তাকী ও পরহেজগার এবং উম্মাহ দরদী মায়ের জাতি বিনির্মাণ।
মেয়ে সন্তানের জন্য মায়ের কোলই একমাত্র নিরাপদ ও আদর্শ মাদ্রাসা। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সকল মেয়ে সন্তান কে আপন ঘরে নিজ মাতা পিতার একান্ত তত্ত্বাবধানে মহিলা শিক্ষিকার মাধ্যমে ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু যেহেতু সকলের পক্ষে আপন ঘরে মহিলা শিক্ষিকা দ্বারা মেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা সম্ভবপর নয় তাই সকলের জন্য ইলমে দ্বীন শিক্ষা করার ব্যবস্থা হিসাবে আল্লাহ তালার উপর ভরসা করে আকাবির ওলামায়ে কেরাম এর পরামর্শে আবাসিক /অনাবাসিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জামিয়া ফাতিমা (রাঃ) পথ চলা শুরু হয় ।
কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক সালাফে সালেহীনের আদর্শ অনুসরণ করে নারীদের ইলমে দ্বীন শিক্ষার খেদমতে অংশগ্রহণের জন্য *১৪৩৭হি, মোতাবেক ২০১৫ ঈ, সনে প্রতিষ্ঠিত হয়। জামিয়া ফাতিমা (রাঃ) আন-নেছাইয়্যাহ*।
আল্লাহ্ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে কক্সবাজার জেলায় চকরিয়া রামপুর ষ্টেশনে মাদ্রাসার নিজস্ব জমির উপর অত্র জমিয়ার শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। অত্র জামিয়ায় শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এবং মসজিদ ও শিক্ষা ভবন এবং আবাসিক ভবনের জন্য সকলের কাছে দুয়া প্রার্থী।
বিভাগসমূহ
১- নূরানী
রওজাতুল আতফাল (প্লে )
হাদিকাতুল আতফাল ( নার্সারি)
সফফে আউয়াল ( ক্লাস ওয়ান )
সফফে সানী ( ক্লাস টু)
সফফে সালেস ( ক্লাস থ্রি)
সফফে রাবে ( ক্লাস ফোর)
১- ছোটদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কোর্স। কোরআন শরীফ বিশুদ্ধ তেলাওয়াত, নির্বাচিত সূরা ও হাদীস মুখস্তকরন, আকাইদ ,মাসায়েল ও মাসনুন দোয়া শিক্ষা, বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদদের পরামর্শ ক্রমে বাছাই করা কারিকুলামে বাংলা, ইংরেজি ,গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ের সমন্বয়ে নূরানী ও প্রাইমারি বিভাগ ।
২- নিয়মিত পাঠ পরিকল্পনা (Lesson plan) অনুযায়ী শ্রেণী কক্ষে পাঠদান। পূর্ণ শিক্ষাবর্ষে তিনটি সেমিস্টারে নিয়মিত প্রতিযোগিতামূলক টার্ম টেস্ট ও প্রয়োজনীয় টেস্ট ও বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মান যাচাইয়ের নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা। প্রত্যেক পরীক্ষার পর Guardians Meeting এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের Academic সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান। পাঠদানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের প্রয়োজনীয় ব্যবহার ও পুর্ণাঙ্গ কম্পিউটার ল্যাব প্রক্রিয়াধীন। শিক্ষার্থীদের মানসিক-দৈহিক বিকাশে খেলা-ধুলা, বিজ্ঞান প্রজেক্ট, সৃজনশীলতা ও অন্যান্য প্রতিযোগিতা আয়োজনের ব্যবস্থা আছে। সর্বোপরি, আছে দ্বীনি মূল্যবোধ সম্পন্ন অভিজ্ঞ শিক্ষিকামন্ডলীর আপ্রাণ প্রচেষ্টা।
৩- সম্পূর্ণ মহিলা শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণী কক্ষ।
২- নাজেরা ও হিফয বিভাগ
১- নিয়মিত মশকের ব্যবস্থা ও মাখরাজ ও সিফাত, ওয়াকফ-ইবতেদা, আয়াতে মুতাশাবিহাতের প্রতি গুরুত্বারোপ।
২- ইয়াদের প্রতি গুরুত্বারোপ।
৩- বাংলা ও অংক এবং মুনাজাতে মাকবুল পাঠদান।
৪- সম্পূর্ণ মহিলা শিক্ষিকা দ্বারা পরিচালিত ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেণী কক্ষ।
৩ – কিতাব বিভাগ ( ইবতেদায়ি থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত)
১- আরবি গ্রামার তথা নাহু ও সরফে দক্ষ করে আরবি সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি আরবি কথোপকথনে পারদর্শী করে তোলা।
২- বক্তৃতা প্রশিক্ষণ ও দেয়ালিকা ।
৩- সেলাই , রান্না ও ঘরের কাজে পারদর্শী রূপে গড়ার জন্য প্রশিক্ষণ ।
৪- হাতের লেখা সুন্দর ও বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থাকরণ।
৫- অভিজ্ঞ শিক্ষিকা ও মহিলা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত।
৬-ইত্তেহাদ ও হাইয়াতুল উলইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা। ( শিক্ষার্থীগণ ইত্তেহাদ ও হাইয়াতুল উলিয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষা মেধাতালিকায় অবস্থান ও ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। আল হামদুলিল্লাহ ! )